সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদার গল্প সন্দীপ রায় পরিচালিত টিন্টোরেটর যিশু ছবিটির কিছু অংশের শুটিং এখানে হয়েছিল। ছবিটি শুরুই হয়েছে রাজবাড়ীতে ঢোকা দিয়ে, এছাড়া আরো কিছু বাংলা ছবির শুটিংও হয়েছে এই রাজবাড়ীতে। কাগজে পড়েছিলাম কিছু টুরিস্টের অসভ্য আচরণের জন্য একবার এখানে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তবে তা ছিল সাময়িক কিন্তু তারপর এই ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী বদলে গেল হোটেলে, ফলতঃ এখন আর ভিতরে ঢুকে ঘুরে দেখার উপায় নেই, গেটের বাইরে থেকে উঁকি মেরে একঝলক দেখে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর ব্যবস্থা নাহলে গাঁটের কড়ি খরচা করে একরাত থাকতে হবে এখানে।
অন্দরমহলে না ঢুকলেও আমার কিন্তু রাজবাড়ী চত্বরটা ভালো করে ঘোরা, আসলে ২০১৬ ঝাড়গ্রাম বসন্ত উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি ছিল এবং সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছিলাম সেবার।
প্রধান দরজা দিয়ে ঢুকে সামনে পড়বে ফুলের সুন্দর বাগান এবং ফোয়ারা, তার পিছনে উঁকি দিচ্ছে রাজবাড়ী। বাঁ দিকে অথিতিদের জন্য সুন্দর আউটহাউস যেখানে নাকি একসময় থেকে গেছেন Lord Willingdon, Prafulla Chandra Ghosh, Bidhan Chandra Ray, Lal Bahadur Shastri, Morarji Desai, Uttam Kumar, Saiyid Nurul Hasan থেকে হালফিলে Pranab Mukherjee এবং আমাদের Mamata Banerjeeও.
এছাড়া আছে একটি পরিত্যক্ত সারভেন্ট কোয়াটার এবং আড়ম্বরহীন দুটি মন্দির, একটি রাধা-কৃষ্ণের অপরটি ডমরুধরের। আমরা যখন গেছিলাম তখন কীর্তন চলছিল, শ্রুতিমধুর কীর্তনের রেশ নিয়ে পাশের শিব মন্দিরটিও ঘুরে নিলাম, মন্দিরের বারান্দাতে রাখা আছে কয়েকটা কাঠের মুগুর, বেশ ভারী। রাজবাড়ী, মন্দির, বাগান, ফোয়ারা, গাছপালা ঘেরা এই পরিবেশটা বেশ উপভোগ্য, শীতের অলস সকালটায় রোদ মাখতে মাখতে কাটিয়ে দেওয়া যায় একটা দিন।
মূল রাজবাড়ী Calcutta Improvement Trust এর নকশায় ১৯২২ সালে তৈরি হওয়া শুরু হয়ে ১৯৩১ সালে শেষ হয়। ইটালিয়ান এবং ইসলামিক স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে তৈরি এই রাজবাড়ী অনন্য এবং সত্যিই সুন্দর। বর্তমানে কটা কটেজও হয়েছে, বুকিং অনলাইন WBTDC এর ওয়েবসাইট থেকে।
পরবর্তী পর্ব – https://sayantansharba.wordpress.com/2020/03/01/kanakdurga-mandir-jhargram-chilkigarh-jamboni-kanak-aranya/
পূর্ববর্তী পর্ব – https://sayantansharba.wordpress.com/2020/02/22/jhargram-street-adivasi-market-sabji-patti/
2 thoughts on “ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী, ঝাড়গ্রাম – ২”
Comments are closed.